Join Telegram Join Facebook বাংলা রচনা
সাহিত্যের ইতিহাস সাজেশান Question-Paper
WBCS স্কুল নোটস ইতিহাস

কণ্টক গাড়ি কমল সম পদতল, গোবিন্দদাস, অভিসার

প্রিয় শিক্ষার্থীরা,

বৈষ্ণব পদাবলীর মূল পদ ব্যাখ্যাসহ পোস্ট এখানে দেওয়া হলো। 


কণ্টক গাড়ি কমল সম পদতল, গোবিন্দদাস, অভিসার 



✅ Join Our Telegram Channel ✅





কণ্টক গাড়ি কমল সম পদতল, গোবিন্দদাস, অভিসার






গোবিন্দদাস । অভিসার 


কণ্টক গাড়ি কমল সম পদতল

মঞ্জীর চীরহি ঝাঁপি।

গাগরি বারি ঢারি করি পীছল

চলতহি অঙ্গুলি চাপি।।

মাধব তুয়া অভিসারক লাগি।

দূতর পন্থ গমন ধনি সাধয়ে 

মন্দিরে যামিনি জাগি।।

কর যুগে নয়ন  মুদি চলু ভামিনী 

তিমির পয়ানক আশে। 

কর কঙ্কণ-পণ  ফণিমুখ বন্ধন

শিখই ভুজগ গুরু পাশে।। 

গুরুজন বচন বধির সম মানই

আন শুনই কহ আন।

পরিজন বচনে মুগধী সম হাসই 

গােবিন্দদাস পরমান।।




আলােচনা :


গােবিন্দদাস বিরচিত আলোচ্য পদটি অভিসার পর্যায়ভুক্ত। এখানে বর্ষাভিসারের জন্য রাধার ঐকান্তিক মানসিকতা ও নিবিড় অনুশীলন চেষ্টার পরিচয় প্রকাশিত। গােবিন্দদাস 'কবীন্দ্রবচন সমুচ্চয়'-এর একটি পদের প্রত্যক্ষ অনুসরণে এই পদটি রচনা করেছেন। "পিচ্ছিল পথে অন্ধকারে নিঃশব্দে পথ চলতে হবে প্রিয় মিলনাভিসারে যাওয়ার জন্য, এই ভেবে এক মুগ্ধ নারী পায়ের নূপুর ছিন্ন বস্ত্রে বেঁধে এবং দুচোখ করতল দ্বারা আচ্ছাদন করে নিজবরনে পথচলা অভ্যাস করেছেন।” এই চিত্রটি অবলম্বনে গােবিন্দদাস তাঁর পদে লৌকিক জীবনচিত্রকে অনুপম আধ্যাত্মিক সুষমায় মণ্ডিত করে তুলতে পেরেছেন। এখানেই পদটির গৌরব।


রাধা অভিসারে যাওয়ার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। অতি সংগােপনে চলছে তাঁর  এই নিবিড় অনুশীলন। প্রকৃত পক্ষে এ-ও তাে এক দুরূহ তপশ্চর্যা। প্রবল বরিষণ মুখর রাতে অন্ধকার পিছল পথে রাধাকে কৃষ্ণ সমাগমের উদ্দেশ্যে যেতে হবে। রাধা রাজকুলসঙ্গিনী, কুলবধূ। এহেন পথে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তাঁর নেই। কিন্তু সময় কালে যাতে অসুবিধায় না পড়েন, নির্বিঘ্নে পথ পার হয়ে যাতে পরম বঞ্চিতের সঙ্গে লক্ষ্যস্থলে মিলিত হতে পারেন, সেজন্য রাধা কঠোর অনুশীলন করে নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। তিনি আঙিনায় জল ঢেলে পিছল করে নিয়েছেন। তাতে কাঁটা পুঁতে দিয়েছেন। তারপর পা টিপে টিপে পথ চলা অভ্যাস করছেন। বর্ষণ মুখর তিমিরাচ্ছন্ন পথে চলতে গিয়ে যাতে অসুবিধা না হয়, সেজন্য হাত দিয়ে চোখ দুটো ঢেকে নিয়ে পদচারণা করছেন। পথে সর্প-ভয় থাকতে পারে ভেবে রাধা হাতের কঙ্কণ দক্ষিণা স্বরূপ দিয়ে সাপের ওঝার কাছ থেকে সৰ্প-ৰ্বশীকরণ মন্ত্র বা ওষুধ শিখে নিচ্ছেন। কৃষ্ণভাবনায় রাধার চিত্ত এতই নিবিষ্ট যে, তিনি গুরুজনের বচনে কোন কানই দেন না, যেন বধির। পরিজন বাক্যে মুগ্ধ নারীর মতাে মৃদু হাসেন শুধু। সব মিলিয়ে বলতে হয়, পদটিতে কবিরাজ গােবিন্দদাসের কাব্য- নিমিতি কৌশল ও রসসিদ্ধির চমৎকার নির্দ্শন লক্ষিত হয়।



 সমস্ত তালিকা



------------------------------------------------------

 




আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন








-------------------------------------------------------------

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url