হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন উত্তর, দশম শ্রেণি, Hariye Jaoya Kali kolom, Class 10 Madhyamik, Descriptive Long Questions & Answers
প্রিয় মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা,
আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো মাধ্যমিক বাংলা হারিয়ে যাওয়া কালিকলম প্রবন্ধ শ্রীপান্থ-র || মাধ্যমিক হারিয়ে যাওয়া কালিকলম প্রবন্ধ থেকে ৫ নম্বরের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | Ten Bengali Examination - মাধ্যমিক বাংলা থেকে ৫ নম্বরের বড় প্রশ্ন ও উত্তর | এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
লেখক শ্রীপান্থ ছোটবেলায় বাড়িতে অন্যদের সাহায্য নিয়ে কালী বানাতেন। কালি তৈরি সম্পর্কে তখন একটি ছড়া প্রচলিত ছিল। সেটি হলো —
কবি এই হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল কে জাগির দুধের মধ্যে মিশ্রিত করে লোহার পাত্রে ঘষে টেকসই কালি বানানো যায়। তারপর অনেকে সেই সময় কাঠের উনুনে রান্নার ফলে কড়াইয়ের তলায় যে কালি জমতো তাকে লাউ পাতার সাহায্য তুলে পাথরের বাটিতে গুলিয়ে ভালো করে কালি তৈরি করা যেত। এবং সেই কালিতে হরিতকী ঘোষতো, আবার ভাজাপোড়া বাটা আতপ চাল মিশিয়ে উনুন নেতা ফোটানো হতো, তারপর ন্যাকড়া থেকে দৌড়াতে রাখা হতো। গ্রামে থাকার সময় লেখক বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম বানাতেন। তার মনে হয় দিন যদি প্রাচীন মিশরে জন্মাতে তবে নীলনদের তীরে থাকা নলখাগড়া দিয়ে কলম বানাতে বান থেকে কুড়িয়ে পাওয়া হাড় হতো কলম। ফাউন্টেন পেন এখনো জাগরুক। তাই লেখক এই প্রবন্ধে এমন মন্তব্য করেছে।
তিনি ব্যবসায়ী সূত্রে চুক্তিপত্রে সই করতে গিয়েছিলেন। সেসময় অন্যান্য ব্যবসায়ীর মতো তিনি দোয়াত কলম নিয়ে বেরিয়েছিলেন। দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ কাগজের উপর উল্টে পড়ে যায়। তাই সেই অবস্থায় তিনি কালি সন্ধানে ছোটেন। তারপর তিনি ফিরে এসে শোনেন অন্য এক ব্যবসায়ীর সই সাবুদ সাঙ্গ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। তখন ওয়াটারম্যান বিমস হয়ে পড়েন এবং কালি কলম এই সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধানের প্রতিজ্ঞা করেন তারপর ।
এই প্রতিজ্ঞার ফলে ওয়াটারম্যান সুদূরপ্রসারী হন। তারপর জন্ম নিল ঝরনা কলম, অর্থাৎ ফাউন্টেন পেন। এবং কালীর দোয়াত নিয়ে ছুটোছুটি অন্ত হলো । তারপর বিভিন্ন ধরনের ফাউন্টেন পেন আবিষ্কৃত হতে থাকে । তারপর ওয়াটারম্যান ছাড়াও পার্কার, সোয়ান ইত্যাদি কত রকমের পেন বাজারে এসে গেল। তারপর লেখালেখির কাজকাম অনেক সুবিধা জনক হয়ে উঠল। লেখকের বক্তব্য কলেজ জীবনে সমস্ত পড়ুয়াদের পকেটে দেখা যেত ফাউন্টেন পেন। এবং আস্তে আস্তে কঞ্চির কলম, খাগের কলম, পালকের কলম ইত্যাদি পেন উঠে গেলো।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্তের লেখা। এই প্রবন্ধের কবি বলতে চেয়েছেন ছোটোবেলায় বাসের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন লেখক । ফাউন্টেন পেন বাজারে এলে তিনি ওসব ছেড়ে ওই কলমেই লিখতে শুরু করেন । এবং নিজেকে কালিখেকাে কলমের ভক্ত বলে উল্লেখ করেছেন । ফাউন্ট লেখকদের সখ সৌখিনতা সামগ্রী হয়ে উঠেছিল। এবং যুগের দাবি মেনে ফাউন্টেন পেনের ভক্ত হয়েও তিনি বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা যায়। তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
তারপর সবকিছুর পরিবর্তন ঘটে। এবং দেখা যায় পরিবর্তনের ধারকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কলম হিসাবে বাসের কঞ্চি ব্যবহারের কথা মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে। আগে মানুষ নলখাগড়া, পালকৃ নানা রকম লেখার উপকরণ নয় এখন আর । এখন ফাউন্টেন পেন লেখালেখির জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে বাজার দখল করেছিল তারও দিন ফুরিয়ে আসে। কলম বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যে বলপেনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল, কবি তা বলপেন কে তিমি মনে প্রানে স্বাগত জানাতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত তাকেও বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল। এবং বেদনায় এই অসহায় আত্মসমর্পণ, কিন্তু মেনে না নিয়ে উপায় নেই।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন যে পত্রিকা দপ্তরে চাকরি করতেন সেখানের কথা বলা হয়েছে। সেখানে সবাই লেখালেখির কাজে যুক্ত ছিলেন।
নিখিল সরকারের যে সংবাদপত্র অফিসের কর্মসূত্রযুক্ত সেখানে সবাই লেখালেখির কাজ করেন ফলে তা লেখালেখির অফিস নামেই পরিচিত ছিল। এবং সেখানে লেখা সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কারো হাতে কলম ছিল না। একমাত্র কলম ছিল লেখক এর হাতে। দেখা যায় কম্পিউটারে লিখতে পছন্দ করেন প্রত্যেকে । কিবোর্ডের বোতাম গুলিতে চাপ দিয়ে তারা মনের যে ভাবনা ফুটিয়ে তোলেন তাই ভেসে ওঠে। তার ফলে লেখা দ্রুত হয়।
অপরদিকে পুরানো রীতির অভ্যাস বলে কম্পিউটারে পরিবর্তে কলমের লেখক লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু নতুন যুগের লেখকদের দেখে তিনি আধুনিক প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে গ্রহণ করেছিলেন এবং অনবরত লিখে যাচ্ছিলেন কিবোর্ডের সাহায্যে । কিন্তু মাঝে মাঝেই তাকিয়ে তারা দেখে নেন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা লেখা। এই পদ্ধতি তা লেখকের মন কে শায় দেয়না। লেখক শ্রী পান্থ কলমের সাহায্যে যা লেখেন এবং তা কম্পিউটারের সাহায্যে প্রিন্ট করে দেন। লেখক শ্রীপান্ত একাই ওই অফিসে কলমে লিখতেন। তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে ।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে বিবর্তনের ইতিহাস কে তুলে ধরা হয়েছে। ইন্টেন পেন ব্যবহারের আগে মানুষ লেখার প্রয়োজনে নানা রকমের কলম তৈরি করেছেন। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি কলম, পালকের কলম, স্টাইলাস ইত্যাদির সাহায্যে মানুষ লিখতেন । এবং কালিতে নিভ ডুবিয়ে তখন লিখতে হতো। তারপর ফাউন্টেন পেন কে বলা হতো রিসার্ভার পেন। ওয়াটার ম্যান সেই পেন কে উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে আধুনিক রূপে তৈরি করলে একে বলা হয় ফাউন্টেন পেন।
এবং দেখা যায় বিভিন্ন দামের ফাউন্টেন পেনে বাজারে ভর্তি হয়ে যেতে থাকে। আগের মত আর দোয়াতের কালিতে কলম ডুবিয়ে লেখা হয় না। কালী ভর্তি করলে ফাউন্টেন পেনে অনেকক্ষণ লেখা হতে থাকে। পারকার, সোয়ান ওয়াটারম্যান ইত্যাদি নামের ফাউন্টেন পেনগুলি ছিল নানা ধরনের। এবং ধনী পরিবারের মানুষেরা পেনের শিশে হীরে ব্যবহার করতেন। তারপর প্লাটিনাম কেউ সোনা ইত্যাদির সাহায্যে ফাউন্টেন পেনগুলিকে দামি ও আকর্ষণীয় করা হতো। তখন বাজারে যেদিকে চোখ যাবে সেদিকে নানা ধরনের ফাউন্টেন পেন। তারপর আস্তে আস্তে কলমের ব্যবহার উঠে যায়।
মোগল দরবারেও তাদের উপস্থিতি আমরা দেখি । বাংলাদেশের রাজা বা ভূস্বামীরা লিপিদের প্রতি নকল করতেন এবং তাদের জীবিকার সংস্থান করতেন। মানুষ প্রয়োজনীয় পুথি নকল করার জন্য লিপিকরদের সাহায্য নিতেন। তাদের হাতের লেখা অত্যন্ত সুন্দর হওয়ার ফলে অধিকারী মানুষরা সামান্য পারিশ্রমিক পেতেন বলে ধারণা ছিলো। এবং চার খন্ড রামায়ণকে নকল করে ১৮ শতকে একজন পেয়েছিলেন সাত টাকা। আর পেয়েছিলেন কিছু কাপড় আর মিষ্টি । তারপর দেখা গেল উনিশ শতকের অবস্থা বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তারপর দেখা গেল বারো আনার বিনিময়ে ৩২ হাজার অক্ষরেখানো হতো। তাই তাদেরকে ওস্তাদ কলমবাজ বা ক্যালিগ্রাফিস্ট ইত্যাদি বলা হতো।
দেখা যায় প্রযুক্তিবিদ্যার প্রসারের কারণে দোয়াত কালী এবং নবযুক্ত পেন বলতেন প্রভূতি ক্রমে অবলুপ্তির পথে চলে গেছে। ফলে লেখার সুবিধা অনেক । তাই দোয়াত কালি কলমের কাজ ফুরিয়েছে । যাত্রা পথ সুগম করেছে কম্পিউটার।
দেখা যায় লেখালেখির কথা কিছুকাল আগেও মানুষ ভাবতে পারত না । ফলে কলমবিহীন লেখার অস্তিত্ব কল্পনাও বাইরে ছিল । তখন ছিল কঞ্চি, খাগের পালকের কলম ইত্যাদি । তারপর এলো ফাউন্টেন পেন বা বলপেন। তখন দুআত কালীর প্রয়োজন ধীরে ধীরে শেষ হতে শুরু হয় । তারপর দেখা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন শক্তির বিষয়ে তার কম্পিউটারের কিবোর্ড এ হাত ঘুরিয়ে নবীন প্রজন্ম স্ক্রিনে লেখা ফুটিয়ে তুলছে। কলম অপরিহার্য নয় এখন তাদের কাছে । এই প্রবন্ধে কবি এই ভাবেই কলমের অবলুপ্তের কথা বলেছেন । তাই এমন মন্তব্য।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা লেখা । নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের লেখার যেখানে সৃষ্টি হয়। লেখার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাদের কারোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেখকরা কম্পিউটারের সাহায্যে নানা বিষয় নিয়ে অনবরত লিখে যান । কিবোর্ডে সতর্ক হতে শব্দগুলিকে চাপ দিয়ে লেখার সৃষ্টি করেন এবং সামনে থাকা চৌকো আয়নার মতো কাচের স্ক্রিনে নেতা সঠিকভাবে উঠত কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখেন । তাই এমন বলা হয়েছে।
কোনো কারনে অফিসে কলম না নিয়ে গেলে এক অসহনীয় অবস্থার মুখোমুখি তাকে হতে হয় । কেননা প্রযুক্তি নির্ভর অফিস একেবারে কলম শূন্য । যদিও লেখকের অফিস মূলত তো লেখার অফিস এবং সবাই এখানে লেখক । অনেকে খুঁজে মুখের কলম যদি বা একখানা জোটে তাহলে তা লেখার সুখ বঞ্চিত। বাংলা ভাষায় প্রচলিত কথাটি হল, কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুন্সি।
কলম এখন এতটাই সস্তা হয়ে উঠেছে যে পকেট চুরি করার বিশেষ আগ্রহ পোষণ করে না। এবং লেখার উপকরণ হিসাবে কলম নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ক্রমশই উন্নত হয়েছে। ফাউন্টেন পেনের একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল এক সময়। নামিদামি নানান ধরনের পেন ছিলো তখন। তখন সেই পেনগুলি লেখকদের নেশাগ্রস্ত করতো। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ফাউন্টেন পেনের নেশা। এবং নানাভাবে পেনগুলিকে আকর্ষণীয় মূল্যবান করা হতো। পকেটমারেরাও দুই পয়সা উপার্জন করতে পারতো হাত সাপাই করে। কিন্তু সস্তায় ডট পেন বাজারে আসার একেবারে কলম বিস্ফোরণ ঘটে যায়। এখন কলম যার তার হাতে। কলম পায়ের মোজায়। কলম বুক পকেটের কাধে ছোটো পকেট। ইত্যাদি এমনকি কারো চুলেও। দেশে সবাই স্বাক্ষর না হলেও কলম এখন সর্বজনীন।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। একসময় বলা হতো কলমের প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে। আজকের দিনে দাড়িয়ে কলম সমস্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে থাকে কিন্তু আগে মূলত কায়েস্থ সম্প্রদায়িক কলমে কে জীবিকা করে বেঁচে থাকতো।
লেখকরা পেশা হিসাবে গ্রহণ করে জীবিকার সংস্থান করতেন। ব্যবসায়ীর অফিসে কিংবা বিভিন্ন অফিস আদালতে কেরানীক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কেউ আবার সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন অর্জন করেছেন। কুশলী লিপিকার তারা নানা সই নকল করতেন।
এই প্রবন্ধের রানা প্রতাপ এর বংশধর এই বীর জাতির মানুষেরা চওড়া গোঁফ রাখতে পছন্দ করতেন। তারা মনে করেন চওড়া গোপ সাহস শক্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক। গোপ দেখেই রাজপুত পুরুষকে চেনা যেতো। তাই এই প্রবন্ধে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
কলমবিহীন লেখা অস্তিত্ব কল্পনারও বাইরে ছিল। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বময় কর অগ্রগতির কারণে কলম আজ জাদুঘরের বিষয় হয়ে উঠেছে।
কম্পিউটারে লেখার প্রমাণটা এসেছে। কম্পিউটার কলমের যাএাপথ সুগম। বলপেনের অস্তিত্ব কেউ জেনো বিপন্ন করে দেবে। কী বোডের হাত ছুইয়ে নবীন প্রজন্ম স্ক্রিনের লেখা ফুটিয়ে তুলতে আগ্রহী। তাই কলম তাদের কাছে অপরিহার্য নয়।
প্রতার অগ্রগতিতে ভাবপ্রকাশ এর ক্ষেত্রে ইঙ্গিত ও আকারের যুগের অবসান হওয়ার পরেই যুগের অনিবার্য প্রয়োজন এসেছে কলম ও কালি। মানুষের সঙ্গে সেই সকল কালীর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। পৃথিবীর চলমানতাই পরিবর্তনশীলতায় পথ ধরে সেই কলম কালির ক্ষেত্রে এসেছে বৈচিত্র। কলম ও কালির আদি ইতিহাস এবং বর্তমান আধুনিক যুগে তার অনিবার্য ফলশ্রুতি। কম্পিউটার বা পরিগনক কলমের বিকল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন কলমের বিপুল উপস্থিতি প্রসঙ্গে। লেখক যখন ছোট ছিলেন তখন কলমের স্বল্পতায় দেখেছিলেন। আধুনিক কলমের প্রবেশ ও অবাধ ছিল না । তখন বাসের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করে বাড়িতে বিচিত্র উপায়ে কালি তৈরি করা হতো। এবং তা দিয়ে লেখা হতো।
আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলমের পরিবর্তন ঘটে। যেমন পালকের কলম, খাগের কলম ইত্যাদি যাদের পুরনো দিনের তৈলচিত্রে দেখা যায়। অফিসে সাজানো কলম আসলে পালকের কলম নয়। তা আসলে নকল বা ছদ্মবেশী বলপেন। বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন কলকাতার চৌরঙ্গীর পথে অজস্র ফেরিওয়ালারা ঘুরে ঘুরে বেড়ান এবং তাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন কলম বিক্রি করে। এখন কলমের দাম কম হওয়ায় প্রত্যেকের কাছে কলম সাধারন বিষয়। তাই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।
লেখাগুলো পুকুরের জলে ফেলে দিত তার কারণ ওই লেখা অক্ষরগুলো যদি গরু খায় তাহলে অমঙ্গল হবে। নিরক্ষর মানুষকে তো বলতো অক্ষর গোমাংস । তাই লেখা ভর্তি কলাপাতা খেলে পাপ হবে।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ টি শ্রীপান্থের লেখা লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন কালি কলম তার অসৈশবের স্মৃতি রোমান্থন করেছেন। বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত কলাপাতা এইসব উপকরণ দিয়ে লেখা হতো। জিশু খ্রীষ্টের জন্মের আগের লেখার উপকরণে চিত্রটি একটু অন্যরকমই ছিল। লেখার উপকরণ ছিল সরল। সে ছিল এক এক ধরনের । এসব ধারনাগুলির পরিচয় পেতেই লেখক এমন মন্তব্য করেছেন।
তাই এই প্রবন্ধের জীশুখ্রীষ্টের জন্মের আগে যদি ভারতে জন্মগ্রহণ না করে প্রবন্ধিক মিশরে জন্মগ্রহণ করতেন এবং বাঙালি না হয়ে প্রাচীন সুমেরীয় বা ফিনিশিয়ান হতে তাহলে হয়তো নীলনদের তীর থেকে নল খাগড়া ভেঙে নিয়ে আসতেন । মন্তব্য করা হয়েছে । তারপর হয়তো সেটি লেখার জন্য সূচালো করে কলম বানিয়ে নিতেন । বা বন থেকে হার কুড়িয়ে নিতেন। তারপর সেটিকে লেখার জন্য কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন । তারপর তিনি আরো বলেছেন তিনি যদি রং সাম্রাজ্যের অধীনস্থ জুলিয়াস সিজার হতেন তাহলে তার শ্রেষ্ঠ কারিগররা তার হাতে একটি ব্রঞ্চের শালাকা, যার নাম স্টাইলাস তুলে দিতেন । তাই কবি এমন মন্তব্য তুলে ধরেছেন এই প্রবন্ধ।
সবার আগে লেখক এর মনো জাগতের ভাবনার সৃষ্টি করতে হয়। তারপর তা হস্ত দৃঢ় কলমের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে হয়। তাই মধুসূদন এই প্রসঙ্গে বলেছেন – "হস্তদাসী সাদা তুই মনোদাস হস্ত –"। এই অনুভূতি হওয়ার কারণ লেখক প্রদেশে যার সৃষ্টি করেন তা কালী ভর্তি কলমের মধ্য দিয়ে সাদা কাগজে বর্ণের সাহায্যে প্রকাশ করেন। লেখার সঙ্গে মনের যোগ নিবিড় বলে মনের মতো লেখার প্রথম ভিত্তিভূমি তৈরি হয়। মনের ভূমিকা যদি যথাযত না হয় তাহলে সেই লেখাতেও অন্তহীন বর্ণ সমষ্টি বলে বিবেচিত হবে । তাই এই প্রবন্ধে লেখকের মনোভাব তার রচনার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় । তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে যে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রবাদে তাই বলা হয় ।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ টি শ্রীপান্তর লেখা। এই প্রবন্ধে নানা ধরনের ফাউন্টেন পেনের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার মধ্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফাউন্টেন পেন হলো ওয়াটারম্যান, সোয়ান, শেফার্ড ইত্যাদি।
ফাউন্টেন পেন প্রযুক্তি নির্ভর কলম গুলিতে লিখলে জাদুঘরের মতো সম্ভবত করে রাখে। অনেকে আবার নামি দামি লেখক নানা ধরনের ফাউন্টেন সংগ্রহের নেশায় আচ্ছন্ন ছিলেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল সুতিব্রো । তার কাছ থেকে এই নেশা পেয়েছিলেন অনুজপ্রতিম এক বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দ। ২ ডজন ফাউন্টেন পেন প্রত্যক্ষ করেছিলেন প্রাবান্ধুক শ্রীপান্ত । এই পেন গুলির মধ্য বেশ কয়েকটি পারকার ও ছিল। তাই এই প্রবন্ধে বলা হয়েছে ফাউন্টেন পেনের নেশা পূরণ করতে পারতেন ধনী লোকেরায়।
লুইস এডসন ওয়াটারম্যান তখনকার প্রথমত দোয়াত ও কলম নিয়ে বাণিজ্যিক কাজে যেতেন। একবার এক ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র সম্পাদনা করার সময় দোয়াত উল্টে ভয়াবহ বিপত্তি ঘটায়। দোয়াতের কালিতে দলিলের সমস্ত লেখা নষ্ট হয়ে গেল । দলিল লেখার জন্য স্বভাবতই কালির প্রয়োজন হয় । তিনি চুক্তিপত্র প্রস্তুুত করার জন্য কালির সন্ধানে বেরোলেন। প্রয়োজনীয় কালীর দোয়া সংগ্রহ করে যখন ফিরে আসেন তখন সেই দুঃসংবাদ টি শোনেন। দোয়াত। তো উল্টে ব্যবসা ওয়াটারম্যান কে সামরিক বিমান শো করলেও তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। তারি প্রচেষ্টায় এর পর জন্ম হলো ফাউন্টেন পেনের। আদিতে যা ছিল রিজার্ভার পেন। তাকেই লুইস অ্যাডসান ওয়াটারম্যান উন্নত রূপ দিয়ে ফাউন্টেন পেনের রূপ দিলেন ।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধটি হারিয়ে যাওয়া কালি কলোমের অন্তর্গত।
আজকের দিনে দাড়িয়ে কম্পিউটার সারিত যন্ত্রজুগেও তিনি কালি কলমের ভক্ত। কলমের প্রশস্তি তার কন্ঠে । কলমের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতেই তিনি এই রস।ফাউন্টেন পেনের বিশ্বজয় অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী চাহিদা এবং মর্যাদার কথা তুলে ধরতে পেনের বিভিন্ন অংশ এই বন্দুকের ব্যারেল, কার্টিজ ইত্যাদি শব্দের সাদৃশ্যের উল্লেখ করেছেন।
অনেক ও লেখক এর কথাই ইতিহাস পাওয়া যায় কিংবা মিথ্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছে। কলমের শক্তির নিহিতার্থ হলো বুদ্ধিদীপ্ত, যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গের বিকাশের বিকাশের মাধ্যমে গণজাগরণ ঘটানো। একটা যুদ্ধ দিয়ে কিছু মানুষকে হত্যা করা যায়। কিন্তু রচনা শক্তির সহস্র মানুষের ভাবনা দর্শন আদর্শকে প্রচার করে যুগান্তরকে ঘটিয়ে ফেলা যায়। অর্থাৎ যুদ্ধের প্রভাব সাময়িক কিন্তু লেখার প্রভাব চিরস্থায়ী।
লিপি কুশলীদের মুগল দরবারে অত্যন্ত খাতির এবং সম্মান ছিল একসময়। শুধু মুঘল দরবারেই নয় বিশ্বের সব দরবারে বড় সম্মানিত ছিলেন তারা। আমাদের বাংলা মুলুকেউ লিপিদের বিশেষ গুণী ব্যক্তি বলে গণ্য করতেন। তাদের সম্মান করতেন । ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। সাধারণ গৃহস্থ গনও লিপি, কুশলীদের ডেকে পুঁথি নকল করাতেন।
তাদের এত সুন্দর করে তারা লিখতেন যে এখন সেসব দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সুন্দর হস্তাক্ষর সম্পর্কে সংস্কৃত বলা হয়েছে – সমানি সম শীষানি ঘনানি বিরলানি চ। অর্থাৎ সব অক্ষর সমান প্রকৃত ছাত্র সুশৃঙ্খল পরিচ্ছন্ন। যাকে এক একজন বলে থাকেন। মুক্তোর মতো হস্তাক্ষর । বাদশা, রাজা, জমিদার তাদের সংস্কৃতি এবং প্রচারের জন্য সুস্পষ্ট লিপি। প্রতিলিপির আশ্রয় নিতে বাধ্য ছিলেন।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। আমি বোলতে লেখক শ্রীপান্থের কথা বলেছেন।
লেখক যখন কলেজ স্ট্রিটের দোকানে গিয়েছিলেন জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেন কিনতে। লেখক এর কাছে দোকানদার যখন জানতে চান কি ধরনের কলম প্রয়োজন ঠিক তখনই লেখক কিংকর্তব্যবিমূঢ় হন। পেশাগত দক্ষতা দেখিয়ে দোকানদার পারকার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান ইত্যাদি নানা ধরনের ফাউন্টেন পেনের কথা বলে যান। এরপর লেখক এর অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে সস্তায় একটা জাপানি কলম কিনে নিতে বলেন। তারপর পাইলট কলমটির খাপটা সরিয়ে টেবিলের পাশে থাকা একটা মাঠের বোর্ডের ওপর পেনটি ছুড়ে দেন। জ্যান্ত মানুষের দিকে যেমন ছুরি ছুঁড়ে দেওয়া হয় ঠিক তেমনই ভাবটি ঠিক সেরকম থাকে। পেনটির এই বিপুল ক্ষমতা যেন জাদু শক্তির দ্বারা সম্ভব হয়েছিল বলে লেখক জানান।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্তের লেখা । এই প্রবন্ধ কবি বলতে চেয়েছেন কলমের ব্যবহারের জন্য কালি রাখার নানা রকম পাত্র বা দোয়াতের কথা বলেছেন। নানা রকমের দোয়াতো বলি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি হতো। যেমন কাঠ, গ্লাসের পেন্সিল, জেডের, ব্রোঞ্জের, পিতলের ইত্যাদি এমনকি সোনার দোয়াত ও তৈরি হতো।
কবি একবারই সুভানেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখেছিলেন। তখন তার মনে পড়ে ছোটবেলার গ্রামে থাকা গ্রামীন মানুষদের আসিবারনি।
এবং তখন আশীর্বাদ করে বলবে প্রবীণেরা যে ''তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক "। কবি তখন শুভ ঠাকুরের সোনার দোয়াত কলম দেখে অবাকই হয়েছিলেন। তারপর তিনি অবাক হয়ে ভেবেছিলেন শেক্সপিয়ার, মিল্টন, কালিদাস, বঙ্কিমচন্দ্র প্রভূতি এই ভাবেই দোয়াতে কালী রেখে তারা সাহিত্য রচনা করতেন বলেই কবি জেনেছেন।
লেখকরা একসময় কঞ্চির খাগের কলম প্রচলন ছিল । তারপর ফাউন্টেন পেন এল। কিন্তু তবু প্রযুক্তি থেমে থাকে নি বলে বাজারে বলপেনের প্রভাব দেখা গেল। লেখক ফাউন্টেন পেনের ভক্ত হলেও পরে বলপেনের আবার গরম দেখেছে। সময়ের প্রভাবে লেখকের মনে হয় বলপেন তার শৈশবের ভালোলাগার অন্য কলম গুলি কেন হত্যা করেছে। তাই তিনি অনেকটা আত্মসমর্পণে সুরে ফরাসি কবি বর্ণিত কবিতাংশ উল্লেখ করেছেন। আসলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমান্বিত ফলে আমাদের ভালো লাগার সামগ্রীগুলি যে দূরত্ব পরিবর্তন হয় তা পোষণ করা মনোভাব মৃত্যু ঘটে ।
প্রবন্ধকার কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নামই দোকানে একটি ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন। কি ধরনের কলম চান সে কথা দোকানে জানতে চাইলে প্রবন্ধকার ভেবাচ্যাকা খেয়ে যান। শেফার্ড, ওয়াটারম্যান প্রমুখ এক কলমের নাম এবং নাম বলে যেতে থাকেন । তারপর তিনি প্রবন্ধকারের মুখের দিকে তাকিয়েছে তার পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে একটি সস্তার জাপানি পাইলট কিনে নিতে বলেন। কারণ সস্তা হলেও কলমটি কত উন্নতমানের তা বোঝানোর জন্য কলমের মুখ দেখে ভাববে কোলে নিয়ে তিনি কলমটি দাঁড় করানো একটি কাঠের বোর্ডের ওপর ছুড়ে দেন। তারপর বোর্ডের গায়ে দাঁড় করিয়ে খেলোয়ার যেভাবে ধারালো ছুরি ছুড়ে দেন তার ভঙ্গি করে । এরপর দোকানটি কাঠের বোর্ড থেকে কলমটি খুলে এনে প্রবন্ধকারের দেখান। তার নেট থেকেই আছে বলে ইত্যাদি ।
কলমের আঘাতে মৃত্যু হওয়ার কথা বলা হয়েছে কঙ্কাবতী প্রভুতি ব্যতিক্রমী সাহিত্য গ্রন্থের লেখক এৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পিছনে ছিল নাকি নিজের কলম। হঠাৎ করে বুকে বিধে যাওয়ার ফলে কলমটি, তখন তার নাকি মৃত্যু হয়েছিল । তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে ।
পিডিএফ লিঙ্ক নিচে
-------------------------------------------------------------
File Name : হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন
File Format : পিডিএফ
File Language : বাংলা
File Location : গুগল ড্রাইভ
Download Link : হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন
-------------------------------------------------------------
আজকে তোমাদের সঙ্গে শেয়ার করবো মাধ্যমিক বাংলা হারিয়ে যাওয়া কালিকলম প্রবন্ধ শ্রীপান্থ-র || মাধ্যমিক হারিয়ে যাওয়া কালিকলম প্রবন্ধ থেকে ৫ নম্বরের রচনাধর্মী প্রশ্ন ও উত্তর | Ten Bengali Examination - মাধ্যমিক বাংলা থেকে ৫ নম্বরের বড় প্রশ্ন ও উত্তর | এগুলি তোমাদের ফাইনাল পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে।
হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন উত্তর, দশম শ্রেণি, Hariye Jaoya Kali kolom, Class 10 Madhyamik, Descriptive Long Questions & Answers
রচনাধর্মী প্রশ্নের উত্তর
১. কালি কলমের প্রতি প্রবন্ধকারের ভালোবাসা হারিয়ে যাওয়া কালি কলম, প্রবন্ধে কিভাবে ফুটে উঠেছে তা আলোচনা করো?
শ্রীপান্থের লেখা 'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধে কালি ও কলমের প্রতি তার গভীর আকুতির কথা জানিয়েছেন।লেখক শ্রীপান্থ ছোটবেলায় বাড়িতে অন্যদের সাহায্য নিয়ে কালী বানাতেন। কালি তৈরি সম্পর্কে তখন একটি ছড়া প্রচলিত ছিল। সেটি হলো —
"তিল ত্রিফলা শিমুল ছালাছাগ দুগ্ধে করি মেলালৌহপাত্রে লোহার ঘাসিছিঁড়ে পত্র না ছাড়ে মাসি।"
কবি এই হারিয়ে যাওয়া কালি কলম প্রবন্ধে তিল, ত্রিফলা, শিমুল গাছের ছাল কে জাগির দুধের মধ্যে মিশ্রিত করে লোহার পাত্রে ঘষে টেকসই কালি বানানো যায়। তারপর অনেকে সেই সময় কাঠের উনুনে রান্নার ফলে কড়াইয়ের তলায় যে কালি জমতো তাকে লাউ পাতার সাহায্য তুলে পাথরের বাটিতে গুলিয়ে ভালো করে কালি তৈরি করা যেত। এবং সেই কালিতে হরিতকী ঘোষতো, আবার ভাজাপোড়া বাটা আতপ চাল মিশিয়ে উনুন নেতা ফোটানো হতো, তারপর ন্যাকড়া থেকে দৌড়াতে রাখা হতো। গ্রামে থাকার সময় লেখক বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম বানাতেন। তার মনে হয় দিন যদি প্রাচীন মিশরে জন্মাতে তবে নীলনদের তীরে থাকা নলখাগড়া দিয়ে কলম বানাতে বান থেকে কুড়িয়ে পাওয়া হাড় হতো কলম। ফাউন্টেন পেন এখনো জাগরুক। তাই লেখক এই প্রবন্ধে এমন মন্তব্য করেছে।
২. ওয়াটারম্যান মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলেন – ওয়াটারম্যান কে ছিলেন? তিনি মনে মনে কেন প্রতিজ্ঞা করেছিলেন? এর ফলে কি হয়েছিল?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে ওয়াটারম্যান ছিলেন একজন বিখ্যাত ব্যবসায়ী। তার জন্ম হয় নিউইয়াকে। তিনি ব্যবসা সূত্রে ভারতে এসেছিলেন। এবং কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । সেখানে তার ফাউন্টেন পেন ছিল বিখ্যাত।তিনি ব্যবসায়ী সূত্রে চুক্তিপত্রে সই করতে গিয়েছিলেন। সেসময় অন্যান্য ব্যবসায়ীর মতো তিনি দোয়াত কলম নিয়ে বেরিয়েছিলেন। দলিল কিছুটা লেখা হয়েছে এমন সময় দোয়াত হঠাৎ কাগজের উপর উল্টে পড়ে যায়। তাই সেই অবস্থায় তিনি কালি সন্ধানে ছোটেন। তারপর তিনি ফিরে এসে শোনেন অন্য এক ব্যবসায়ীর সই সাবুদ সাঙ্গ করে চুক্তিপত্র পাকা করে চলে গেছেন। তখন ওয়াটারম্যান বিমস হয়ে পড়েন এবং কালি কলম এই সমস্যার একটা স্থায়ী সমাধানের প্রতিজ্ঞা করেন তারপর ।
এই প্রতিজ্ঞার ফলে ওয়াটারম্যান সুদূরপ্রসারী হন। তারপর জন্ম নিল ঝরনা কলম, অর্থাৎ ফাউন্টেন পেন। এবং কালীর দোয়াত নিয়ে ছুটোছুটি অন্ত হলো । তারপর বিভিন্ন ধরনের ফাউন্টেন পেন আবিষ্কৃত হতে থাকে । তারপর ওয়াটারম্যান ছাড়াও পার্কার, সোয়ান ইত্যাদি কত রকমের পেন বাজারে এসে গেল। তারপর লেখালেখির কাজকাম অনেক সুবিধা জনক হয়ে উঠল। লেখকের বক্তব্য কলেজ জীবনে সমস্ত পড়ুয়াদের পকেটে দেখা যেত ফাউন্টেন পেন। এবং আস্তে আস্তে কঞ্চির কলম, খাগের কলম, পালকের কলম ইত্যাদি পেন উঠে গেলো।
৩. তুমি সবল আমি দুর্বল। তুমি সাহসী আমি ভীরু। তবু যদি আমাকে হত্যা করতে চাও, আচ্ছা তবে তাই হোক। ধরে নাও আমি মৃত। — কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি? এই উক্তির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো ?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্তের লেখা। এই প্রবন্ধের কবি বলতে চেয়েছেন ছোটোবেলায় বাসের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন লেখক । ফাউন্টেন পেন বাজারে এলে তিনি ওসব ছেড়ে ওই কলমেই লিখতে শুরু করেন । এবং নিজেকে কালিখেকাে কলমের ভক্ত বলে উল্লেখ করেছেন । ফাউন্ট লেখকদের সখ সৌখিনতা সামগ্রী হয়ে উঠেছিল। এবং যুগের দাবি মেনে ফাউন্টেন পেনের ভক্ত হয়েও তিনি বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ করেন বলে জানা যায়। তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
তারপর সবকিছুর পরিবর্তন ঘটে। এবং দেখা যায় পরিবর্তনের ধারকে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। কলম হিসাবে বাসের কঞ্চি ব্যবহারের কথা মানুষ প্রায় ভুলেই গেছে। আগে মানুষ নলখাগড়া, পালকৃ নানা রকম লেখার উপকরণ নয় এখন আর । এখন ফাউন্টেন পেন লেখালেখির জগতে বিপ্লব ঘটিয়ে বাজার দখল করেছিল তারও দিন ফুরিয়ে আসে। কলম বিস্ফোরণ ঘটিয়ে যে বলপেনের আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল, কবি তা বলপেন কে তিমি মনে প্রানে স্বাগত জানাতে পারেন নি। শেষ পর্যন্ত তাকেও বলপেনের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল। এবং বেদনায় এই অসহায় আত্মসমর্পণ, কিন্তু মেনে না নিয়ে উপায় নেই।
৪. সবাই এখানে লেখক। কিন্তু আমি ছাড়া কারো হাতে কলম নেই। — এখানে বলতে কোথাকার কথা বলা হয়েছে? লেখক হওয়া সত্ত্বেও কারো হাতে কলম নেই কেনো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন যে পত্রিকা দপ্তরে চাকরি করতেন সেখানের কথা বলা হয়েছে। সেখানে সবাই লেখালেখির কাজে যুক্ত ছিলেন।
নিখিল সরকারের যে সংবাদপত্র অফিসের কর্মসূত্রযুক্ত সেখানে সবাই লেখালেখির কাজ করেন ফলে তা লেখালেখির অফিস নামেই পরিচিত ছিল। এবং সেখানে লেখা সঙ্গে যুক্ত থাকলেও কারো হাতে কলম ছিল না। একমাত্র কলম ছিল লেখক এর হাতে। দেখা যায় কম্পিউটারে লিখতে পছন্দ করেন প্রত্যেকে । কিবোর্ডের বোতাম গুলিতে চাপ দিয়ে তারা মনের যে ভাবনা ফুটিয়ে তোলেন তাই ভেসে ওঠে। তার ফলে লেখা দ্রুত হয়।
অপরদিকে পুরানো রীতির অভ্যাস বলে কম্পিউটারে পরিবর্তে কলমের লেখক লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। কিন্তু নতুন যুগের লেখকদের দেখে তিনি আধুনিক প্রযুক্তিকে সঠিকভাবে গ্রহণ করেছিলেন এবং অনবরত লিখে যাচ্ছিলেন কিবোর্ডের সাহায্যে । কিন্তু মাঝে মাঝেই তাকিয়ে তারা দেখে নেন সঠিকভাবে হচ্ছে কিনা লেখা। এই পদ্ধতি তা লেখকের মন কে শায় দেয়না। লেখক শ্রী পান্থ কলমের সাহায্যে যা লেখেন এবং তা কম্পিউটারের সাহায্যে প্রিন্ট করে দেন। লেখক শ্রীপান্ত একাই ওই অফিসে কলমে লিখতেন। তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে ।
৫. পন্ডিতরা বলেন কলমের দুনিয়ায় যা সত্যিকারের বিপ্লব ঘটায় তা ফাউন্টেন পেন —- এই বিপ্লব সম্পর্কে যা জানো তাই লেখো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে বিবর্তনের ইতিহাস কে তুলে ধরা হয়েছে। ইন্টেন পেন ব্যবহারের আগে মানুষ লেখার প্রয়োজনে নানা রকমের কলম তৈরি করেছেন। বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি কলম, পালকের কলম, স্টাইলাস ইত্যাদির সাহায্যে মানুষ লিখতেন । এবং কালিতে নিভ ডুবিয়ে তখন লিখতে হতো। তারপর ফাউন্টেন পেন কে বলা হতো রিসার্ভার পেন। ওয়াটার ম্যান সেই পেন কে উন্নত প্রযুক্তি দিয়ে আধুনিক রূপে তৈরি করলে একে বলা হয় ফাউন্টেন পেন।
এবং দেখা যায় বিভিন্ন দামের ফাউন্টেন পেনে বাজারে ভর্তি হয়ে যেতে থাকে। আগের মত আর দোয়াতের কালিতে কলম ডুবিয়ে লেখা হয় না। কালী ভর্তি করলে ফাউন্টেন পেনে অনেকক্ষণ লেখা হতে থাকে। পারকার, সোয়ান ওয়াটারম্যান ইত্যাদি নামের ফাউন্টেন পেনগুলি ছিল নানা ধরনের। এবং ধনী পরিবারের মানুষেরা পেনের শিশে হীরে ব্যবহার করতেন। তারপর প্লাটিনাম কেউ সোনা ইত্যাদির সাহায্যে ফাউন্টেন পেনগুলিকে দামি ও আকর্ষণীয় করা হতো। তখন বাজারে যেদিকে চোখ যাবে সেদিকে নানা ধরনের ফাউন্টেন পেন। তারপর আস্তে আস্তে কলমের ব্যবহার উঠে যায়।
৬. যারা ওস্তাদ কলমবাজ তাদের বলা হলো ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপি -কুশলী।– লিপি কুশলীদের কাজ কি ছিল আলোচনা কর?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন পুথিকে নকল করার জন্য লিপি- কুশলীদের প্রয়োজন হতো। তারা অসাধারন হস্তাক্ষর দিয়ে পুতির পর পুথি নকল করে পাঠকদের কাছে পৌঁছে দিতেন । লিপি বা ক্যালিগ্রাফিস্ট বা কুশলীর 'ওস্তাদ কলমবাজ , ছিলেন বলে সুন্দর হস্তক্ষেপে পারদর্শী ছিলেন। তাই পুথী নকলও করতে পারতেন ।মোগল দরবারেও তাদের উপস্থিতি আমরা দেখি । বাংলাদেশের রাজা বা ভূস্বামীরা লিপিদের প্রতি নকল করতেন এবং তাদের জীবিকার সংস্থান করতেন। মানুষ প্রয়োজনীয় পুথি নকল করার জন্য লিপিকরদের সাহায্য নিতেন। তাদের হাতের লেখা অত্যন্ত সুন্দর হওয়ার ফলে অধিকারী মানুষরা সামান্য পারিশ্রমিক পেতেন বলে ধারণা ছিলো। এবং চার খন্ড রামায়ণকে নকল করে ১৮ শতকে একজন পেয়েছিলেন সাত টাকা। আর পেয়েছিলেন কিছু কাপড় আর মিষ্টি । তারপর দেখা গেল উনিশ শতকের অবস্থা বিশেষ পরিবর্তন হয়নি। তারপর দেখা গেল বারো আনার বিনিময়ে ৩২ হাজার অক্ষরেখানো হতো। তাই তাদেরকে ওস্তাদ কলমবাজ বা ক্যালিগ্রাফিস্ট ইত্যাদি বলা হতো।
৭. আশ্চর্য, সবই আজ অবলুপ্তির পথে। — কোন জিনিস আজ অবলুপ্তির পথে? এবং এই অবলুপ্তির কারণ কি? এ বিষয়ে লেখকের মতামত কি?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ টি শ্রীপান্থের লেখা । সময়ের সঙ্গে সঙ্গে লিখন শৈলীর সঙ্গে যুক্ত দ্রব্যের পরিবর্তনের কথাপ্রসঙ্গে কলম কালির অবলুপ্তির কথা বলা হয়েছে।দেখা যায় প্রযুক্তিবিদ্যার প্রসারের কারণে দোয়াত কালী এবং নবযুক্ত পেন বলতেন প্রভূতি ক্রমে অবলুপ্তির পথে চলে গেছে। ফলে লেখার সুবিধা অনেক । তাই দোয়াত কালি কলমের কাজ ফুরিয়েছে । যাত্রা পথ সুগম করেছে কম্পিউটার।
দেখা যায় লেখালেখির কথা কিছুকাল আগেও মানুষ ভাবতে পারত না । ফলে কলমবিহীন লেখার অস্তিত্ব কল্পনাও বাইরে ছিল । তখন ছিল কঞ্চি, খাগের পালকের কলম ইত্যাদি । তারপর এলো ফাউন্টেন পেন বা বলপেন। তখন দুআত কালীর প্রয়োজন ধীরে ধীরে শেষ হতে শুরু হয় । তারপর দেখা যায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন শক্তির বিষয়ে তার কম্পিউটারের কিবোর্ড এ হাত ঘুরিয়ে নবীন প্রজন্ম স্ক্রিনে লেখা ফুটিয়ে তুলছে। কলম অপরিহার্য নয় এখন তাদের কাছে । এই প্রবন্ধে কবি এই ভাবেই কলমের অবলুপ্তের কথা বলেছেন । তাই এমন মন্তব্য।
৮.কাল গুনে বুঝিবা আজ আমারও তাই — প্রসঙ্গ উল্লেখ করে অংশটি ব্যাখ্যা করো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা লেখা । নানা বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ধরনের লেখার যেখানে সৃষ্টি হয়। লেখার সঙ্গে যুক্ত থাকেন তাদের কারোর সঙ্গে তাল মিলিয়ে লেখকরা কম্পিউটারের সাহায্যে নানা বিষয় নিয়ে অনবরত লিখে যান । কিবোর্ডে সতর্ক হতে শব্দগুলিকে চাপ দিয়ে লেখার সৃষ্টি করেন এবং সামনে থাকা চৌকো আয়নার মতো কাচের স্ক্রিনে নেতা সঠিকভাবে উঠত কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখেন । তাই এমন বলা হয়েছে।
কোনো কারনে অফিসে কলম না নিয়ে গেলে এক অসহনীয় অবস্থার মুখোমুখি তাকে হতে হয় । কেননা প্রযুক্তি নির্ভর অফিস একেবারে কলম শূন্য । যদিও লেখকের অফিস মূলত তো লেখার অফিস এবং সবাই এখানে লেখক । অনেকে খুঁজে মুখের কলম যদি বা একখানা জোটে তাহলে তা লেখার সুখ বঞ্চিত। বাংলা ভাষায় প্রচলিত কথাটি হল, কালি নেই, কলম নেই, বলে আমি মুন্সি।
৯. এসব দিয়ে মুড়ে তাকে আরও দামি, আরও পোক্ত করা হতো। – কিসের কথা বলা হয়েছে? কিভাবে তাকে দামী ও পোক্ত করা হতো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধেটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে ফাউন্টেন পেনের কথা বলা হয়েছে। রিজার্ভার পেন পুরানো অ্যাডসান ওয়াটারম্যান উন্নত রূপ দিয়ে ফাউন্টেন পেনে পরিণত হতো । তাই ফাউন্টেন কে বাণিজ্যিকভাবে সাফল্য দেওয়ার জন্য নানা ধরনের প্রয়োজন চোখে পড়ে । সূচালো মুখের পরিবর্তে ছিল চওড়া মুখের নীভ। গরুর শিং বা কচ্ছপের খোল কেটে তৈরি টেকসই সেই নিবের মুখে আবার হীরে বসানো হতো। আরো ও দামি শক্ত করার জন্য ফাউন্টেন পেন কে প্লাটিনাম বা সোনা ইত্যাদি দিয়ে মুড়ে ফেলা হতো ।১০. কলম তাদের কাছে আজ অাজ অস্পৃশ্য – কাদের কাছে? এবং কেন তাদের কাছে কলম আজ অলস্পৃশ্য হয়ে উঠেছে?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে তাদের বলতে পকেটমারদের কথা বলা হয়েছে।কলম এখন এতটাই সস্তা হয়ে উঠেছে যে পকেট চুরি করার বিশেষ আগ্রহ পোষণ করে না। এবং লেখার উপকরণ হিসাবে কলম নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ক্রমশই উন্নত হয়েছে। ফাউন্টেন পেনের একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল এক সময়। নামিদামি নানান ধরনের পেন ছিলো তখন। তখন সেই পেনগুলি লেখকদের নেশাগ্রস্ত করতো। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ফাউন্টেন পেনের নেশা। এবং নানাভাবে পেনগুলিকে আকর্ষণীয় মূল্যবান করা হতো। পকেটমারেরাও দুই পয়সা উপার্জন করতে পারতো হাত সাপাই করে। কিন্তু সস্তায় ডট পেন বাজারে আসার একেবারে কলম বিস্ফোরণ ঘটে যায়। এখন কলম যার তার হাতে। কলম পায়ের মোজায়। কলম বুক পকেটের কাধে ছোটো পকেট। ইত্যাদি এমনকি কারো চুলেও। দেশে সবাই স্বাক্ষর না হলেও কলম এখন সর্বজনীন।
১১. এক সময় বলা হতো – কলমে কায়স্থ চিনি গোঁফেতে রাজপুত। —- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করো। একথা বলার কারণ বিশ্লেষণ করো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। একসময় বলা হতো কলমের প্রয়োজনীয়তার কথা বলতে গিয়ে। আজকের দিনে দাড়িয়ে কলম সমস্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে থাকে কিন্তু আগে মূলত কায়েস্থ সম্প্রদায়িক কলমে কে জীবিকা করে বেঁচে থাকতো।
লেখকরা পেশা হিসাবে গ্রহণ করে জীবিকার সংস্থান করতেন। ব্যবসায়ীর অফিসে কিংবা বিভিন্ন অফিস আদালতে কেরানীক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কেউ আবার সাহিত্যিক হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন অর্জন করেছেন। কুশলী লিপিকার তারা নানা সই নকল করতেন।
এই প্রবন্ধের রানা প্রতাপ এর বংশধর এই বীর জাতির মানুষেরা চওড়া গোঁফ রাখতে পছন্দ করতেন। তারা মনে করেন চওড়া গোপ সাহস শক্তি ও সৌন্দর্যের প্রতীক। গোপ দেখেই রাজপুত পুরুষকে চেনা যেতো। তাই এই প্রবন্ধে এমন মন্তব্য করা হয়েছে।
১২. আশ্চর্য সবই আজ অবলুপ্তির পথে — কি আজ অবলুপ্তির পথে? বক্তার আশ্চর্য লেগেছে কেনো? এই প্রবন্ধে চলে যাওয়ার পথে কারণ কী?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন লিখন শৈলীর সঙ্গে যুক্ত দ্রব্যের পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। এবং বলা হয়েছে এক সময় ছিল কঞ্চির, পালকের খাগের কলম। তার পরবর্তীকালে এসেছে ফাউন্টেন পেন। তারপর এসেছে বলপেন। তারপর আস্তে আস্তে কমে যায় দোয়াত কালীর প্রয়োজন। আজ এসেছে কম্পিউটার। তাই এখন বলপেনের প্রয়োজনীয়তা ও কমতে শুরু করেছে।কলমবিহীন লেখা অস্তিত্ব কল্পনারও বাইরে ছিল। কিন্তু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিশ্বময় কর অগ্রগতির কারণে কলম আজ জাদুঘরের বিষয় হয়ে উঠেছে।
কম্পিউটারে লেখার প্রমাণটা এসেছে। কম্পিউটার কলমের যাএাপথ সুগম। বলপেনের অস্তিত্ব কেউ জেনো বিপন্ন করে দেবে। কী বোডের হাত ছুইয়ে নবীন প্রজন্ম স্ক্রিনের লেখা ফুটিয়ে তুলতে আগ্রহী। তাই কলম তাদের কাছে অপরিহার্য নয়।
১৩. প্রবন্ধ কাকে বলে? প্রবন্ধ হিসাবে হারিয়ে যাওয়া কালি কলম রচনার সার্থকতা বিচার করো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা বন্ধের লেখা। বক্তব্যের ভাব ও ভাষার বন্ধনেই হল প্রবন্ধ। প্রবন্ধ নিবন্ধ নামে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।প্রতার অগ্রগতিতে ভাবপ্রকাশ এর ক্ষেত্রে ইঙ্গিত ও আকারের যুগের অবসান হওয়ার পরেই যুগের অনিবার্য প্রয়োজন এসেছে কলম ও কালি। মানুষের সঙ্গে সেই সকল কালীর নিবিড় সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। পৃথিবীর চলমানতাই পরিবর্তনশীলতায় পথ ধরে সেই কলম কালির ক্ষেত্রে এসেছে বৈচিত্র। কলম ও কালির আদি ইতিহাস এবং বর্তমান আধুনিক যুগে তার অনিবার্য ফলশ্রুতি। কম্পিউটার বা পরিগনক কলমের বিকল্প হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
১৪. ফলে প্রত্যেকের পকেটে কলম — প্রসঙ্গটি ব্যাখ্যা করো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন কলমের বিপুল উপস্থিতি প্রসঙ্গে। লেখক যখন ছোট ছিলেন তখন কলমের স্বল্পতায় দেখেছিলেন। আধুনিক কলমের প্রবেশ ও অবাধ ছিল না । তখন বাসের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করে বাড়িতে বিচিত্র উপায়ে কালি তৈরি করা হতো। এবং তা দিয়ে লেখা হতো।
আস্তে আস্তে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কলমের পরিবর্তন ঘটে। যেমন পালকের কলম, খাগের কলম ইত্যাদি যাদের পুরনো দিনের তৈলচিত্রে দেখা যায়। অফিসে সাজানো কলম আসলে পালকের কলম নয়। তা আসলে নকল বা ছদ্মবেশী বলপেন। বিদেশি সাংবাদিক লিখেছিলেন কলকাতার চৌরঙ্গীর পথে অজস্র ফেরিওয়ালারা ঘুরে ঘুরে বেড়ান এবং তাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজন কলম বিক্রি করে। এখন কলমের দাম কম হওয়ায় প্রত্যেকের কাছে কলম সাধারন বিষয়। তাই কবি এমন মন্তব্য করেছেন।
১৫. আমরা ফেরার পথে কোন পুকুরে তা ফেলে দিয়ে আসতাম – কি ফেলে দিয়ে আসা হতো? কেন ফেলা হতো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। সে সময় লেখকরা বাজারে বিক্রি হওয়ার নানা রকম কলমের পরিবর্তে তারা বাড়িতে কলম তৈরি করতেন। তার কারণ পারাগাঁয়ে প্রচুর বাঁশ আছে । এই বাঁশের কঞ্চি কেটে কলম তৈরি করতেন । তারপরে সেই কলমটি লেখার জন্য কাগজের আকারে কলাপাতা কেটে নিতেন। এবং সেই কলা পাতায় লেখা হতো। স্কুলের কাজ বা হোমটাস্ক। বান্ডিল করে দেখতেন মাস্টারমশাইরা সেই লেখাগুলি। তারপরে ছাত্ররা বাড়ি ফেরার সময় সেই কলা পাতায় লেখা গুলো কুকুরের জলে ফেলে দিত।লেখাগুলো পুকুরের জলে ফেলে দিত তার কারণ ওই লেখা অক্ষরগুলো যদি গরু খায় তাহলে অমঙ্গল হবে। নিরক্ষর মানুষকে তো বলতো অক্ষর গোমাংস । তাই লেখা ভর্তি কলাপাতা খেলে পাপ হবে।
১৬. আমি যদি জিশু খ্রীষ্টের আগে জন্মাতাম — কোন প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করা হয়েছে? যিশুখ্রিস্টের আগে জন্মালে বক্তা কি করতেন?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ টি শ্রীপান্থের লেখা লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন কালি কলম তার অসৈশবের স্মৃতি রোমান্থন করেছেন। বাঁশের কলম, মাটির দোয়াত কলাপাতা এইসব উপকরণ দিয়ে লেখা হতো। জিশু খ্রীষ্টের জন্মের আগের লেখার উপকরণে চিত্রটি একটু অন্যরকমই ছিল। লেখার উপকরণ ছিল সরল। সে ছিল এক এক ধরনের । এসব ধারনাগুলির পরিচয় পেতেই লেখক এমন মন্তব্য করেছেন।
তাই এই প্রবন্ধের জীশুখ্রীষ্টের জন্মের আগে যদি ভারতে জন্মগ্রহণ না করে প্রবন্ধিক মিশরে জন্মগ্রহণ করতেন এবং বাঙালি না হয়ে প্রাচীন সুমেরীয় বা ফিনিশিয়ান হতে তাহলে হয়তো নীলনদের তীর থেকে নল খাগড়া ভেঙে নিয়ে আসতেন । মন্তব্য করা হয়েছে । তারপর হয়তো সেটি লেখার জন্য সূচালো করে কলম বানিয়ে নিতেন । বা বন থেকে হার কুড়িয়ে নিতেন। তারপর সেটিকে লেখার জন্য কলম হিসেবে ব্যবহার করতেন । তারপর তিনি আরো বলেছেন তিনি যদি রং সাম্রাজ্যের অধীনস্থ জুলিয়াস সিজার হতেন তাহলে তার শ্রেষ্ঠ কারিগররা তার হাতে একটি ব্রঞ্চের শালাকা, যার নাম স্টাইলাস তুলে দিতেন । তাই কবি এমন মন্তব্য তুলে ধরেছেন এই প্রবন্ধ।
১৭. কথাই বলে কালি কলম মন লেখে তিনজন — কথা বলতে কি বলা হয়েছে? ব্যাখ্যা করো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন এখানে কথাই বলতে প্রবাদকে বোঝানো হয়েছে । তাই এমন বক্তব্য।সবার আগে লেখক এর মনো জাগতের ভাবনার সৃষ্টি করতে হয়। তারপর তা হস্ত দৃঢ় কলমের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করতে হয়। তাই মধুসূদন এই প্রসঙ্গে বলেছেন – "হস্তদাসী সাদা তুই মনোদাস হস্ত –"। এই অনুভূতি হওয়ার কারণ লেখক প্রদেশে যার সৃষ্টি করেন তা কালী ভর্তি কলমের মধ্য দিয়ে সাদা কাগজে বর্ণের সাহায্যে প্রকাশ করেন। লেখার সঙ্গে মনের যোগ নিবিড় বলে মনের মতো লেখার প্রথম ভিত্তিভূমি তৈরি হয়। মনের ভূমিকা যদি যথাযত না হয় তাহলে সেই লেখাতেও অন্তহীন বর্ণ সমষ্টি বলে বিবেচিত হবে । তাই এই প্রবন্ধে লেখকের মনোভাব তার রচনার মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় । তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে যে জীবনের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রবাদে তাই বলা হয় ।
১৮. ফাউন্টেন পেনের এক বিপদ তা লেখকের নেশাগ্রস্ত করে —--বিভিন্ন নামের ফাউন্টেন পেন গুলির পরিচয় দাও। ফাউন্টেন পেন কিভাবে লেখকের নেশাগ্রস্ত করে তার দৃষ্টান্ত দেয়।
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধ টি শ্রীপান্তর লেখা। এই প্রবন্ধে নানা ধরনের ফাউন্টেন পেনের উল্লেখ পাওয়া যায়। তার মধ্য কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ফাউন্টেন পেন হলো ওয়াটারম্যান, সোয়ান, শেফার্ড ইত্যাদি।
ফাউন্টেন পেন প্রযুক্তি নির্ভর কলম গুলিতে লিখলে জাদুঘরের মতো সম্ভবত করে রাখে। অনেকে আবার নামি দামি লেখক নানা ধরনের ফাউন্টেন সংগ্রহের নেশায় আচ্ছন্ন ছিলেন। শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর ফাউন্টেন পেন সংগ্রহের নেশা ছিল সুতিব্রো । তার কাছ থেকে এই নেশা পেয়েছিলেন অনুজপ্রতিম এক বিখ্যাত লেখক শৈলজানন্দ। ২ ডজন ফাউন্টেন পেন প্রত্যক্ষ করেছিলেন প্রাবান্ধুক শ্রীপান্ত । এই পেন গুলির মধ্য বেশ কয়েকটি পারকার ও ছিল। তাই এই প্রবন্ধে বলা হয়েছে ফাউন্টেন পেনের নেশা পূরণ করতে পারতেন ধনী লোকেরায়।
১৯. জন্ম নিলো ফাউন্টেন পেন — ফাউন্টেন পেনের চেষ্টা কে? কিভাবে তার জন্ম হয়েছিল?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে ফাউন্টেন পেনের স্রষ্টা হলেন মার্কিন ব্যবসায়ী লুইস অ্যাডসান ওয়াটারম্যান ।লুইস এডসন ওয়াটারম্যান তখনকার প্রথমত দোয়াত ও কলম নিয়ে বাণিজ্যিক কাজে যেতেন। একবার এক ব্যবসায়িক চুক্তিপত্র সম্পাদনা করার সময় দোয়াত উল্টে ভয়াবহ বিপত্তি ঘটায়। দোয়াতের কালিতে দলিলের সমস্ত লেখা নষ্ট হয়ে গেল । দলিল লেখার জন্য স্বভাবতই কালির প্রয়োজন হয় । তিনি চুক্তিপত্র প্রস্তুুত করার জন্য কালির সন্ধানে বেরোলেন। প্রয়োজনীয় কালীর দোয়া সংগ্রহ করে যখন ফিরে আসেন তখন সেই দুঃসংবাদ টি শোনেন। দোয়াত। তো উল্টে ব্যবসা ওয়াটারম্যান কে সামরিক বিমান শো করলেও তিনি মনে মনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হন। তারি প্রচেষ্টায় এর পর জন্ম হলো ফাউন্টেন পেনের। আদিতে যা ছিল রিজার্ভার পেন। তাকেই লুইস অ্যাডসান ওয়াটারম্যান উন্নত রূপ দিয়ে ফাউন্টেন পেনের রূপ দিলেন ।
২০. কলম কে বলা হয় তলোয়ারের চেয়ে শক্তিধর — কার লেখা? কোন প্রবন্ধের অন্তর্গত? এবং প্রাবান্ধিকের এ কথা বলার কারণ কি ?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধটি হারিয়ে যাওয়া কালি কলোমের অন্তর্গত।
আজকের দিনে দাড়িয়ে কম্পিউটার সারিত যন্ত্রজুগেও তিনি কালি কলমের ভক্ত। কলমের প্রশস্তি তার কন্ঠে । কলমের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতেই তিনি এই রস।ফাউন্টেন পেনের বিশ্বজয় অর্থাৎ বিশ্বব্যাপী চাহিদা এবং মর্যাদার কথা তুলে ধরতে পেনের বিভিন্ন অংশ এই বন্দুকের ব্যারেল, কার্টিজ ইত্যাদি শব্দের সাদৃশ্যের উল্লেখ করেছেন।
অনেক ও লেখক এর কথাই ইতিহাস পাওয়া যায় কিংবা মিথ্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে গেছে। কলমের শক্তির নিহিতার্থ হলো বুদ্ধিদীপ্ত, যুক্তিবাদী, মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গের বিকাশের বিকাশের মাধ্যমে গণজাগরণ ঘটানো। একটা যুদ্ধ দিয়ে কিছু মানুষকে হত্যা করা যায়। কিন্তু রচনা শক্তির সহস্র মানুষের ভাবনা দর্শন আদর্শকে প্রচার করে যুগান্তরকে ঘটিয়ে ফেলা যায়। অর্থাৎ যুদ্ধের প্রভাব সাময়িক কিন্তু লেখার প্রভাব চিরস্থায়ী।
২১. মুঘল দরবারে একদিন তাদের কত না খাতির বা কত না সম্মান? —- এখানে কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের কি ধরনের খাতির হতো? এই খাতিরের কারণ কি ছিল?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্তের লেখা। এই অংশে ক্যালিগ্রাফিস্ট বা লিপি - কুশলী অর্থাৎ ওস্তাদ কলমবাজদের কথা বলা হয়েছে ।লিপি কুশলীদের মুগল দরবারে অত্যন্ত খাতির এবং সম্মান ছিল একসময়। শুধু মুঘল দরবারেই নয় বিশ্বের সব দরবারে বড় সম্মানিত ছিলেন তারা। আমাদের বাংলা মুলুকেউ লিপিদের বিশেষ গুণী ব্যক্তি বলে গণ্য করতেন। তাদের সম্মান করতেন । ভরণপোষণের ব্যবস্থা করতেন। সাধারণ গৃহস্থ গনও লিপি, কুশলীদের ডেকে পুঁথি নকল করাতেন।
তাদের এত সুন্দর করে তারা লিখতেন যে এখন সেসব দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। সুন্দর হস্তাক্ষর সম্পর্কে সংস্কৃত বলা হয়েছে – সমানি সম শীষানি ঘনানি বিরলানি চ। অর্থাৎ সব অক্ষর সমান প্রকৃত ছাত্র সুশৃঙ্খল পরিচ্ছন্ন। যাকে এক একজন বলে থাকেন। মুক্তোর মতো হস্তাক্ষর । বাদশা, রাজা, জমিদার তাদের সংস্কৃতি এবং প্রচারের জন্য সুস্পষ্ট লিপি। প্রতিলিপির আশ্রয় নিতে বাধ্য ছিলেন।
২২. আমি সেদিন সেই জাদু- পাইলট নিয়েয় ঘরে ফিরেছিলাম । — আমি কে? অংশটির তাৎপর্য লেখো?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। আমি বোলতে লেখক শ্রীপান্থের কথা বলেছেন।
লেখক যখন কলেজ স্ট্রিটের দোকানে গিয়েছিলেন জীবনের প্রথম ফাউন্টেন পেন কিনতে। লেখক এর কাছে দোকানদার যখন জানতে চান কি ধরনের কলম প্রয়োজন ঠিক তখনই লেখক কিংকর্তব্যবিমূঢ় হন। পেশাগত দক্ষতা দেখিয়ে দোকানদার পারকার, শেফার্ড, ওয়াটারম্যান ইত্যাদি নানা ধরনের ফাউন্টেন পেনের কথা বলে যান। এরপর লেখক এর অর্থনৈতিক অবস্থা বুঝে সস্তায় একটা জাপানি কলম কিনে নিতে বলেন। তারপর পাইলট কলমটির খাপটা সরিয়ে টেবিলের পাশে থাকা একটা মাঠের বোর্ডের ওপর পেনটি ছুড়ে দেন। জ্যান্ত মানুষের দিকে যেমন ছুরি ছুঁড়ে দেওয়া হয় ঠিক তেমনই ভাবটি ঠিক সেরকম থাকে। পেনটির এই বিপুল ক্ষমতা যেন জাদু শক্তির দ্বারা সম্ভব হয়েছিল বলে লেখক জানান।
২৩. দোয়াত যে কত রকমের হতে পারে না দেখলে বিশ্বাস করা শক্ত — নানা ধরনের তোমাদের পরিচয় দাও। এই দোয়াতের সংগ্রহ দোয়াতে গিয়ে বক্তার কি অভিজ্ঞতা হয়েছিল?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্তের লেখা । এই প্রবন্ধ কবি বলতে চেয়েছেন কলমের ব্যবহারের জন্য কালি রাখার নানা রকম পাত্র বা দোয়াতের কথা বলেছেন। নানা রকমের দোয়াতো বলি বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে তৈরি হতো। যেমন কাঠ, গ্লাসের পেন্সিল, জেডের, ব্রোঞ্জের, পিতলের ইত্যাদি এমনকি সোনার দোয়াত ও তৈরি হতো।
কবি একবারই সুভানেন্দ্রনাথ ঠাকুরের দোয়াতের সংগ্রহ দেখেছিলেন। তখন তার মনে পড়ে ছোটবেলার গ্রামে থাকা গ্রামীন মানুষদের আসিবারনি।
এবং তখন আশীর্বাদ করে বলবে প্রবীণেরা যে ''তোমার সোনার দোয়াত কলম হোক "। কবি তখন শুভ ঠাকুরের সোনার দোয়াত কলম দেখে অবাকই হয়েছিলেন। তারপর তিনি অবাক হয়ে ভেবেছিলেন শেক্সপিয়ার, মিল্টন, কালিদাস, বঙ্কিমচন্দ্র প্রভূতি এই ভাবেই দোয়াতে কালী রেখে তারা সাহিত্য রচনা করতেন বলেই কবি জেনেছেন।
২৪. সেই ফরাসি কবির মত বলেছি — ফরাসি কবির মতো লেখক কি বলেছেন ও কেন বলেছেন?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে কলমের উদ্দেশ্যে ফরাসি কবির মতো বলেছেন যে তুমি সবল আমি দুর্বল। তাই তুমি সাহসী আমি ভীরু। তবু তুমি যদি আমাকে হত্যা করতে চাও তবে তাই হোক। ধরে নাও আমি মৃত। তাই এমন কথা বলা হয়েছে।লেখকরা একসময় কঞ্চির খাগের কলম প্রচলন ছিল । তারপর ফাউন্টেন পেন এল। কিন্তু তবু প্রযুক্তি থেমে থাকে নি বলে বাজারে বলপেনের প্রভাব দেখা গেল। লেখক ফাউন্টেন পেনের ভক্ত হলেও পরে বলপেনের আবার গরম দেখেছে। সময়ের প্রভাবে লেখকের মনে হয় বলপেন তার শৈশবের ভালোলাগার অন্য কলম গুলি কেন হত্যা করেছে। তাই তিনি অনেকটা আত্মসমর্পণে সুরে ফরাসি কবি বর্ণিত কবিতাংশ উল্লেখ করেছেন। আসলে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ক্রমান্বিত ফলে আমাদের ভালো লাগার সামগ্রীগুলি যে দূরত্ব পরিবর্তন হয় তা পোষণ করা মনোভাব মৃত্যু ঘটে ।
২৫. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েক বছর পরের ঘটনা — কার কোন রচনা অংশ? ঘটনাটি কি ছিল?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা। এই প্রবন্ধে কবি বলতে চেয়েছেন ফাউন্টেন পেন কেনার অভিজ্ঞতার সরস বর্ণনা দিতে গিয়ে উদ্ধৃত মন্তব্যটি করেছেন।প্রবন্ধকার কলকাতার কলেজ স্ট্রিটের একটি নামই দোকানে একটি ফাউন্টেন পেন কিনতে গিয়েছিলেন। কি ধরনের কলম চান সে কথা দোকানে জানতে চাইলে প্রবন্ধকার ভেবাচ্যাকা খেয়ে যান। শেফার্ড, ওয়াটারম্যান প্রমুখ এক কলমের নাম এবং নাম বলে যেতে থাকেন । তারপর তিনি প্রবন্ধকারের মুখের দিকে তাকিয়েছে তার পকেটের অবস্থা বুঝতে পেরে একটি সস্তার জাপানি পাইলট কিনে নিতে বলেন। কারণ সস্তা হলেও কলমটি কত উন্নতমানের তা বোঝানোর জন্য কলমের মুখ দেখে ভাববে কোলে নিয়ে তিনি কলমটি দাঁড় করানো একটি কাঠের বোর্ডের ওপর ছুড়ে দেন। তারপর বোর্ডের গায়ে দাঁড় করিয়ে খেলোয়ার যেভাবে ধারালো ছুরি ছুড়ে দেন তার ভঙ্গি করে । এরপর দোকানটি কাঠের বোর্ড থেকে কলমটি খুলে এনে প্রবন্ধকারের দেখান। তার নেট থেকেই আছে বলে ইত্যাদি ।
২৬. সেই আঘাতেই পরিণতি নাকি তার মৃত্যু — কে কোন প্রসঙ্গে এই উক্তি করেছেন? কার কিভাবে মৃত্যু হয়েছে বলে লেখক সংশয় প্রকাশ করেছেন?
'হারিয়ে যাওয়া কালি কলম' প্রবন্ধটি শ্রীপান্থের লেখা । প্রবন্ধকার বলেছেন শানিত তলোয়ারের চেয়ে ক্ষুরধার লেখনি যে অনেক শক্তিশালী সেই সত্যের কথা বলেছেন তিনি। প্রবাদ বাক্যই বলা হয়েছে অসির চেয়ে মাসি বড়ো। লেখনি যখন যুক্তি বুদ্ধির সাহায্যে লেখা তৈরি করে তখন তা অজস্র মানুষের কাছে মুহূর্তে পৌঁছে যায় এবং মানুষের চিন্তা জগতকে প্রভাবিত করে। মানুষের চিন্তার জগতে বিপুল আলোড়ন তোলে। তবে কলম যে অক্ষরিক অর্থেই কোন মানুষকে খুন করতে পারেন একবার অত্যন্ত সে প্রমাণ আছে।কলমের আঘাতে মৃত্যু হওয়ার কথা বলা হয়েছে কঙ্কাবতী প্রভুতি ব্যতিক্রমী সাহিত্য গ্রন্থের লেখক এৈলোক্যনাথ মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পিছনে ছিল নাকি নিজের কলম। হঠাৎ করে বুকে বিধে যাওয়ার ফলে কলমটি, তখন তার নাকি মৃত্যু হয়েছিল । তাই এমন মন্তব্য করা হয়েছে ।
দশম শ্রেণির বাংলা অন্যান্য লেখা
- জ্ঞানচক্ষু [প্রশ্ন উত্তর]
- অসুখী একজন [প্রশ্ন উত্তর]
- আয় আরো বেঁধে বেঁধে থাকি [প্রশ্ন উত্তর]
- আফ্রিকা [প্রশ্ন উত্তর]
- হারিয়ে যাওয়া কালি কলম [প্রশ্ন উত্তর]
- বহুরূপী [প্রশ্ন উত্তর]
- অভিষেক [প্রশ্ন উত্তর]
- সিরাজদৌল্লা [প্রশ্ন উত্তর]
- প্রলয়োল্লাস [প্রশ্ন উত্তর]
- পথের দাবী [প্রশ্ন উত্তর]
- সিন্ধুতীরে [প্রশ্ন উত্তর]
- অদল বদল [প্রশ্ন উত্তর]
- অস্ত্রের বিরুদ্ধে গান [প্রশ্ন উত্তর]
- বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান [প্রশ্ন উত্তর]
- নদীর বিদ্রোহ [প্রশ্ন উত্তর]
- কোনি [প্রশ্ন উত্তর]
পিডিএফ লিঙ্ক নিচে
আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন
-------------------------------------------------------------
File Name : হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন
File Format : পিডিএফ
File Language : বাংলা
File Location : গুগল ড্রাইভ
Download Link : হারিয়ে যাওয়া কালিকলম [শ্রীপান্থ] প্রবন্ধের রচনাধর্মী 25+ প্রশ্ন
-------------------------------------------------------------