Join Telegram Join Facebook বাংলা রচনা
সাহিত্যের ইতিহাস সাজেশান Question-Paper
WBCS স্কুল নোটস ইতিহাস

আমি দেখি কবিতার বড়ো প্রশ্ন উত্তর | রচনাধর্মী | শক্তি চট্টোপাধ্যায় | দ্বাদশ শ্রেণি

আমি দেখি কবিতার বড়ো প্রশ্ন উত্তর | রচনাধর্মী | শক্তি চট্টোপাধ্যায় | দ্বাদশ শ্রেণি | Ami Dekhi by Shakti Chattopadhyay | Long Answer Type Question Answer


দ্বাদশ শ্রেণির অন্যতম একটি কবিতা 'আমি দেখি'। কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা কবিতাটি অনন্য। আলোচ্য কবিতা থেকে কিছু প্রশ্নের নমুনা উত্তর উল্লেখ করা হল।

এই পোস্টে ৯টি প্রশ্নের নমুনা উত্তর দেওয়া হলো। নিচের পয়েন্ট সবকটি প্রশ্ন উল্লিখিত হয়েছে, যাতে ক্লিক করলে সেই উত্তরে যাওয়া যাবে।


প্রশ্নসমূহ(toc)



[১] “আমার দরকার শুধু গাছ দেখা/গাছ দেখে যাওয়া"— ‘শুধু’ শব্দটি কবি ব্যবহার করেছেন কেন? কবি কেন কেবল গাছই দেখে যেতে চান? অথবা “আমার দরকার শুধু গাছ দেখা”—বক্তা কে? তাঁর গাছ দেখা দরকার কেন? [২০১৬]




[] কবি ও কবিতা = আলোচ্য অংশটি গৃহীত হয়েছে আধুনিক যুগের অন্যতম একজন কবি শক্তি চট্টোপাধায়্যের ‘আমি দেখি’ কবিতা থেকে। উদ্ধৃত-অংশটির বক্তা কবি স্বয়ং।

[] ‘শুধু’ শব্দ ব্যবহারের কারণ = প্রকৃতির প্রতি গভীর ভালোবাসায় কবি চিরহরিতের আকাঙ্ক্ষায় অপেক্ষা করতে থাকেন। কারণ জঙ্গলের সংস্রব থেকে কবি বহুদিন বিচ্ছিন্ন। গাছ কবির কাছে পরমাত্মীয়ের মতো। তাই গাছের নিবিড় সান্নিধ্য পেতে চান কবি। গাছ ছাড়া কবির অন্য কোনো কিছুই দেখার আকাঙ্ক্ষা নেই। কবির তীব্র আর্তি বোঝাতে ‘শুধু’ শব্দের ব্যবহার করেছেন কবি।

[] গাছ দেখে যাওয়ার কারণ = অরণ্যপ্রেমী কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় নাগরিক যান্ত্রিকতা থেকে মুক্তি পেতে চান। কবির বেদনা যেন নগরের রোগাক্রান্ত জনসমাজের সকলের যন্ত্রণার প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। ‘আমার দরকার’ কবির কেবল একার থাকে না, যেন শহরের সমবেত মানুষের আকাঙ্ক্ষা। শারীরিক ও মানসিক— শহরের এই দুই ব্যাধি থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় ‘বৃক্ষ’। তাই তো কবি আদেশ দেন যেন সমগ্র নাগরিকবৃন্দকে—

‘গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও।'

কবি গাছ দেখতে চান, গাছ তুলে এনে বাগানে বসানোর কথা বলেন। রিক্ত নগর পৃথিবীর ব্যাধিগ্রস্ত মানুষদের মধ্যেও যেন কবি দিয়ে যেতে চান সবুজের সুনিবিড় ছোঁয়া।





[২] “আরোগ্যের জন্যে ওই সবুজের ভীষণ দরকার’’—‘ওই সবুজ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? সেই সবুজকে পাওয়ার জন্য কবি কী কী নির্দেশ দিয়েছেন? [২০১৯]




[] প্রথম অংশ = উত্তর বাংলা আধুনিক কবিতার বিশিষ্ট কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় রচিত ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ কাব্যের ‘আমি দেখি’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত। ‘ওই সবুজ’ বলতে মুক্ত প্রকৃতির বুকে ছড়িয়ে থাকা গাছপালার সবুজের কথা বলা হয়েছে।

[] দ্বিতীয় অংশ = কবি জানেন যে, মানুষের সঙ্গে অরণ্যের এক সুগভীর যোগ আছে। কবি অনেকদিন নগরসভ্যতায় বাস করেছেন। শহুরে প্রাণহীনতা, ব্যস্ততা, ক্লান্তি কবিকে কষ্ট দেয়। ইট-কাঠ-পাথর আর কংক্রীটের এই নাগরিক সভ্যতা ক্রমশ গ্রাস করে চলেছে সবুজ অরণ্যপ্রাণকে। নির্বিচারে বৃক্ষনিধন করে নগর তার সমাধির কবর খুঁড়ে চলেছে। কবি বলেছেন—

‘শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়

সবুজের অনটন ঘটে…’

যান্ত্রিক এই সভ্যতায় নির্বিচারে ‘বন কেটে বসত’ নির্মাণ মানুষকে ভয়ানক এক সমস্যার মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। নগরসভ্যতার আগ্রাসনে সবুজের অনটন কবিকে ব্যথিত করেছে। এই কারণে কবি বাঁচার জন্য, আরোগ্যের জন্য, পরিবেশের কোমলতাকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য গাছ তুলে এনে বাগানে বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন—

‘তাই বলি, গাছ তুলে আনো

বাগানে বসাও আমি দেখি’

কবির চোখ চায় সবুজ আর মন চায় সবুজ বাগানের সমারোহ। শহরের ব্যস্ততা, নেতিবোধ, জীবনের প্রতি বিরূপতা থেকে আরোগ্যের জন্য কেবলমাত্র সবুজের সান্নিধ্য দরকার। তিনি জানেন মনের মুক্তিতে গাছের সবুজ একমাত্র ঔষধি।



[৩] “শহরের অসুখ হাঁ করে কেবল সবুজ খায়’”—‘শহরের অসুখ' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? বক্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করো।




[] শহরের অসুখ = ‘আমি দেখি’ কবিতায় কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় শহরের একটি প্রধান অসুখের কথা বলেছেন। শহর মানেই যন্ত্রসভ্যতার আগ্রাসন। ঘন জনবসতিপূর্ণ, কলকারখানা পরিবেষ্টিত শহরে মানুষ বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণেরও অবকাশ পায় না। যানবাহনের ধোঁয়ায় বাতাস দূষিত। প্রচুর জনঘনত্বের কারণে, বসতির প্রয়োজনে এবং স্বার্থান্বেষী মানুষের লোভে চলে অরণ্যনিধন। এরফলে শহরে সবুজের অভাব দেখা দেয়। শহরের আগ্রাসন, শহুরে মানুষের আগ্রাসী, লোভী মানসিকতাকে কবি ‘শহরের অসুখ’ বলতে চেয়েছেন।

[] তাৎপর্য = শহরে সাধারণত গাছপালা কম থাকে, চাষের জন্য বিস্তৃত শস্যক্ষেত্র, বিস্তীর্ণ জঙ্গল থাকে না। যতটুকু সবুজ শহরে থাকে তাও বায়ু ও মাটিদূষণের কারণে লুপ্ত হচ্ছে ক্রমশ। অন্যদিকে স্বার্থান্বেষী লোভী মানুষ নিজেদের স্বার্থে নির্বিচারে গাছপালা ধ্বংস করে। কৃত্রিম সুখের কারণে মানুষের এমন কার্যকলাপকে কবি শহরের চিরকালীন ‘অসুখ’ বলেছেন। এই অসুখের লক্ষণ হল সবুজকে গ্রাস করা। প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল মানুষের প্রতিনিয়ত সভ্যতার বিকাশকে দোহাই দিয়ে সবুজ-নিধনকে এই কবিতায় কবি তুলে ধরেছেন।



[৪] “সবুজের অনটন”—সবুজের অনটন ঘটে কী কী কারণে? কবি কীভাবে এই রোগ থেকে মুক্ত হওয়ার পথ দেখিয়েছেন? অথবা, “সবুজের অনটন ঘটে”--কোথায় সবুজের অনটন ঘটে? কী কারণে সবুজের অনটন ঘটে? সবুজের অনটন কাটাতে কী করা প্রয়োজন বলে কবি মনে করেন?




[] সবুজের অনটনের কারণ = আলোচ্য উদ্ধৃতিটি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি দেখি’ কবিতার অন্তর্গত। সভ্যনগর গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় ক্রমাগত শহর দূষিত হয়েছে, মানুষ আরো অমানবিক হয়ে উঠেছে। বসতির কারণে একের পর এক সবুজ অরণ্য ধ্বংস হয়েছে। শহরের যান্ত্রিক সভ্যতা অরণ্যসম্পদকে প্রতিনিয়ত ধ্বংস করে চলেছে। মানুষের অমানবিতাকেই কবি ‘অসুখ’ বলে চিহ্নিত করেছেন এবং তার ফলে অরণ্যনিধন ঘটে তাকে ‘সবুজ খায়’ বলে ইঙ্গিত করেছেন। এভাবেই সবুজের অনটন অর্থাৎ অভাব ঘটে।

[] মুক্তির উপায় কী = প্রকৃতিপ্রেমী ও পরিবেশ সচেতন কবি গাছ তুলে এনে বাগানে বসানোর আবেদন জানিয়েছেন। কবির প্রয়োজন বৃক্ষদর্শন। কারণ তিনি জানেন গাছের সবুজটুকু শরীরের জন্য ভীষণভাবে দরকার। রোগমুক্তির জন্য, ক্লান্তি উপশমের জন্য সবুজের একান্ত প্রয়োজন। গাছের সাহচর্যে ও সহাবস্থানে মানুষ পায় জীবনের সমৃদ্ধ নিশ্বাস। দু-চোখ ভরে তাই গাছ দেখে যেতে চান কবি।

শহরের অসুখ হাঁ করে প্রতিনিয়ত যে সবুজ গ্রাস করে চলেছে তাকে প্রতিরোধ করার জন্য কবি প্রতিজ্ঞা করেন। নাগরিক জীবনে তাই বৃক্ষকে ফিরিয়ে এনে তিনি শরীর ও মনের যাবতীয় কষ্ট দূর করবেন। নাগরিক জীবনে যে সবুজনিধন যজ্ঞ চলছে তা বন্ধ করতে চান কবি। এই কারণেই মানুষকে তিনি বৃক্ষরোপণের জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। জীবনের শান্তি-তৃপ্তি ফিরিয়ে আনার জন্যই কবি বৃক্ষের আশীর্বাদ কামনা করে বৃক্ষরোপণের পরামর্শ দিয়েছেন।



[৫] “বহুদিন জঙ্গলে কাটেনি দিন”–কেন কবি এ কথা বলেছেন? এই অভাবপূরণের জন্য কবি কী চেয়েছেন?




[] প্রথম অংশ = কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায় নাগরিক পরিবেশে বাস করেছেন। নগরবাসের অভিজ্ঞতা কবির মনে ক্লান্তি এনেছে। তিনি অনুভব করেছেন কংক্রিটের জগতে একান্ত সবুজহীনতা। সবুজের অভাবে কবিমন ক্লান্ত। এবং এর থেকে মুক্তির দিশা একমাত্র দিতে পারে সবুজ বনাঞ্চল, তা তিনি জানেন। একদিকে ব্যস্ত নাগরিক জীবন ও অপরদিকে অপার অরণ্যের মাঝে বিস্তর ব্যবধান। এই ব্যবধানের কারণে মানুষ আজ প্রকৃতির সুনিবিড় স্পর্শ থেকে বিচ্ছিন্ন। কবি বলেছেন—‘বহুদিন শহরেই আছি’। এই শহরবাস থেকে মুক্তি পেতে জঙ্গলযাপন একান্ত প্রয়োজন। অরণ্য তাই কবিকে আকর্ষণ করে।

[] দ্বিতীয় অংশ = নগরজীবনের ব্যস্ততায় কবির জঙ্গলে দিন কাটানো হয়নি। তাই কবিমনে জঙ্গলের জন্য একটা সুতীব্র অভাববোধ থেকেই যায়। আর এই অভাববোধ পূরণের জন্য তিনি গাছ তুলে এনে বাগানে বসাতে চেয়েছেন। তাঁর চোখ চায় সবুজ, দেহ চায় সবুজ বাগান৷ প্রকৃতির বিপুল অঙ্গনে যেতে না পারার বেদনা অন্তত পূরণ হোক বাগানের মধ্যে দিয়ে। কবির এই বাসনা কবিতার মধ্যে প্রকাশ পেয়েছে।



[৬] ‘তাই বলি’ – বক্তা কী বলেছেন? কেন বলেছেন?




[] বক্তার বক্তব্য = প্রকৃতিপ্রেমিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত ‘আমি দেখি' কবিতায় গাছ তুলে বাগানে বসানোর আবেদন রাখা হয়েছে। মানুষ সহ সকল জীব প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল। প্রকৃতিই হল মানুষের প্রাণের স্পন্দন। অথচ মানুষ নির্মমভাবে প্রকৃতির উপর নিপীড়ন চালাচ্ছে। ফলে নাগরিক জীবন এখন অসুস্থ, অবসাদে-ক্লান্তিতে আচ্ছন্ন। তাই প্রকৃতির নির্মলতা, কোমলতাকে ফিরিয়ে আনতে কবি মানুষকে সচেতন হতে অনুরোধ করেছেন।



[] আবেদনের কারণ = কবি নির্বিচারে অরণ্য ধ্বংসের জন্য প্রবলভাবে ব্যথিত। সভ্যতা ও প্রযুক্তি যত বিস্তৃত হচ্ছে তত শ্যামল বনানী ক্রমশ বিলুপ্তির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। নগরায়ণের ফলে আমাদের বসুন্ধরা প্রতিনিয়ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে, হারিয়ে যাচ্ছে 'ছায়া সুনিবিড় শান্তির নীড়’। এই কারণেই কবি গাছগুলো তুলে এনে বাগানে বসানোর আবেদন জানিয়েছেন।

গাছের স্নিগ্ধ সান্নিধ্য আরোগ্যের জন্য একান্ত প্রয়োজনীয়—

‘চোখ তো সবুজ চায় !

দেহ চায় সবুজ বাগ’

শহরের অসুখ প্রত্যেকদিন গ্রাস করছে সবুজ অরণ্য প্রকৃতি। কবির আরণ্যক মন তাই নাগরিক কোলাহল থেকে প্রকৃতির নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যেতে চায়, প্রকৃতির সঙ্গে নিজের সত্তাকে জড়িয়ে রাখতে চান কবি। প্রাণদায়ী উদ্ভিদকে দূরে না রেখে কবি চোখের সামনে বাগানে রাখতে চেয়েছেন। এই ভাবনা থেকেই কবি এমন আবেদন জানিয়েছেন।



[৭] “চোখ তো সবুজ চায়! / দেহ চায় সবুজ বাগান”—তাৎপর্য লেখ।




[] সূচনা = প্রখ্যাত আধুনিক কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ‘অঙ্গুরী তোর হিরণ্য জল' কাব্যগ্রন্থ থেকে নেওয়া 'আমি দেখি’ কবিতা থেকে উদ্ধৃতাংশটি গৃহীত।

[] তাৎপর্য = কবি আরণ্যক প্রকৃতিকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসেন। এই প্রকৃতি কবির হৃদয়ে মধুর প্রশান্তি এনে দেয়। নাগরিক চোখের ‘সবুজ’ সভ্যতার ক্রমবিকাশের ফলে দেখা দিয়েছে অবাধ অরণ্যনিধন। কবি চেয়েছেন সুস্থভাবে বাঁচার জন্য মানুষ বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে সচেতন হয়ে উঠুক।

আধুনিক সভ্যতা থেকে সবুজ আর প্রকৃতির নিবিড় স্পর্শ হারিয়ে যাচ্ছে। সবুজের স্নিগ্ধতার ছোঁয়া শরীর ও মনে কোমলতার পরশ এনে দেয়। তাই কবি মুমূর্ধ নগরীকে পুনরুজ্জীবিত করতে সবুজের সান্নিধ্য চেয়েছেন। নাগরিক জীবনের ক্লান্তিতে কবির মন বেদনাবিধুর। কবি জানেন, শহরের প্রাণহীনতা, মৃত্যুর বিবর্ণতা থেকে সবুজই একমাত্র বাঁচিয়ে তুলতে পারে।

সবুজের স্পর্শে রোগাক্রান্ত সভ্য মানবজাতি আরোগ্যলাভ করবে। তাই তিনি সবুজের স্পর্শ পেতে গাছ এনে বাগানে বসাতে বলেছেন৷ কেবল কবির জন্য নয়; সমগ্র শহরের জন্য, মানুষের সার্বিক সুস্থতার জন্য সবুজের একান্ত প্রয়োজন। কবি ভেবেছেন, জীবনের সমস্ত জড়তা আর নিষ্প্রাণতা কেটে যাবে সবুজের কোমল স্পর্শে।





[৮] “গাছ আনো, বাগানে বসাও।/আমি দেখি।।”--কবির এই নির্দেশ ও অনুরোধের কারণ ও তাৎপর্য আলোচনা করো।




[] অনুরোধের কারণ = কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি দেখি’ কবিতাতে গাছের প্রতি গাছের প্রতি কবির একান্ত আগ্রহ বা তীব্র আকর্ষণ প্রকাশিত হয়েছে। কবি নগরজীবনে বসবাস করলেও তিনি বারবার ছুটে গিয়েছেন জঙ্গলে। জঙ্গল তাঁকে উন্মাদ করে, উদাস করে। সবুজে সান্নিধ্য যেন কবির ‘প্রাণের আরাম, আত্মার শান্তি'। কবি গাছ, গাছের জঙ্গল, গাছের সবুজ অত্যন্ত ভালোবাসেন।

[] তাৎপর্য = অরণ্যপ্রেমী, সবুজের কাঙাল কবি দীর্ঘকাল শহরে বন্দি হয়ে আছেন। নাগরিক শ্রান্তিতে কবি ক্লান্ত। শরীর ও মন আরোগ্যের জন্য তাঁর গাছ দেখা, সবুজের সান্নিধ্য পাওয়া অত্যন্ত জরুরি।

শহরের অসুখ গ্রাস করেছে সবুজতাকে। তবু বাঁচতে হবে কবিকে, বাঁচাতে হবে শহরের মানুষদের ৷ তাই কবি বিকল্পের কথা ভেবেছেন। মঙ্গলকামী, শুভবুদ্দিসম্পন্ন মানুষের কাছে কবি আবেদন করেছেন শহরে গাছ আনতে, বাগান করতে। সবুজ গাছে ভরা বাগান শুধু কবিই দেখবেন না, সকলে দেখবে। কবি মানুষের প্রতিনিধি হয়ে গাছের কাছে নিজের ও সকলের সুস্থতা কামনা করেছেন।



[৯] ‘আমি দেখি’ কবিতাটির মধ্যে দিয়ে কবি কোন বার্তা দিতে চেয়েছেন তা লেখো। অথবা—আলোচ্য কবিতায় কবি কী দেখতে চান এবং কেন দেখতে চান তা ব্যক্ত করো। অথবা—কবিতাটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে লেখো।




[] বিশিষ্ট কবি শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ‘আমি দেখি’ মূলত বাস্তব জীবন থেকে নেওয়া এক অনন্য অনুভবের কবিতা। পরিবেশের শ্রেষ্ঠ সম্পদ যে গাছ, তাকে কেন্দ্র করেই কবিতার মূলভাব ব্যক্ত হয়েছে।

[] বিংশ শতকের নাগরিক জীবনের গতিময়তাকে কবি প্রত্যক্ষ করেছেন। যন্ত্রসভ্যতার আবেগহীনতার প্রেক্ষাপটে ক্লান্ত কবি রচনা করেছেন এই কবিতাটি।

শহরবাসী কবির চিরকালীন আকর্ষণ অরণ্য-প্রকৃতির প্রতি। কিন্তু ক্রমাগত সবুজ ধ্বংস হয়ে কংক্রিটের শহর বর্তমানে ব্যধির শিকার। যন্ত্রসভ্যতার বিকাশ একের পর এক গাছ, একের পর এক অরণ্য যেন হাঁ করে গিলে নিচ্ছে। সমগ্র শহর জুড়ে যেন চলছে অরণ্য-নিধন যজ্ঞ।

বহুদিন শহরবাসে কবির উপলব্ধি হয়েছে সভ্যতার অপরিকল্পিত এই বিকাশ সভ্যতারই বিনাশের কারণ হয়ে উঠছে। অরণ্য ধ্বংস দেখে কবি ক্লান্ত। তিনি পুনরায় প্রকৃতির মায়ের কোলে ফিরে যেতে চান। কবির আবেদন—

‘গাছগুলো তুলে আনো, বাগানে বসাও

আমার দরকার শুধু গাছ দেখা

গাছ দেখে যাওয়া

গাছের সবুজটুকু শরীরে দরকার

আরোগ্যের জন্যে ওই সবুজের ভীষণ দরকার’।

কবি জানেন, এই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি ঘটবে সবুজায়নের মধ্যে দিয়ে। তিনি তাই বলেছেন, গাছ লাগাতে। নাগরিক জীবনকে তিনি আশ্রয় নিতে বলেছেন অরণ্যের কাছে।। কারণ এভাবেই আরোগ্যলাভ সম্ভব।

কবির প্রত্যাশা শহরের বাগান একদিন সবুজ হবে। গড়ে তুলতে হবে সবুজ জঙ্গল। প্রকৃতির মুক্তাঞ্চলেই মানুষের মুক্তি ঘটবে--সবুজের পিয়াসী কবি পাঠকের দরবারে এই বার্তাই বয়ে নিয়ে এসেছেন।

           







Go Home (info)




আমাদের টেলিগ্রাম ও ফেসবুক গ্রুপে যুক্ত হোন

👇👇👇👇


Join Telegram (demo)

Join Facebook (open)






--------------------------------

PDF Download

--------------------------------






Next Post Previous Post
2 Comments
  • Unknown
    Unknown December 13, 2021 at 9:11 PM

    Thanks 👍

  • Unknown
    Unknown April 1, 2022 at 12:37 PM

    Thank you

Add Comment
comment url